- উইন্ডোজ
- ম্যাক ওএস
- ইউনিক্স
অপারেটিং সিষ্টেম হচ্ছে কম্পিউটার প্রোগ্রাম। কম্পিউটার চালু করার পর সবার আগে যে সফটওয়ারটি চলে তা হচ্ছে অপারেটিং সিষ্টেম। অপারেটিং সিষ্টেম নিজেই নিজেকে মেমোরীতে ধারণ করে নেয় এবং কম্পিউটারের রিসোর্সগুলোর ব্যবস্থাপনা করতে থাকে। ইউজার যে এ্যাপ্লিকেশন চালাতে চায় তাকে দরকার অনুযায়ী পরিমানমত এই রিসোর্সগুলো দেয়া হয়। অপারেটিং সিষ্টেম যে কাজ করে থাকে:
- টাস্ক সিডিউলার – বিভিন্ন ধরনের টাস্কের মধ্যে সি.পি.ইউ. বন্টন করে দেয় এই টাস্ক সিডিউলার। এই টাস্কগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউজার কর্তৃক চালানো বিভিন্ন ধরনের এ্যাপ্লিকেশন এবং কিছু অপারেটিং সিষ্টেম টাস্ক। টাস্ক সিডিউলার অপারেটিং সিষ্টেমের সেই অংশ যেটা আপনাকে একই সাথে একটি উইন্ডোতে ওয়ার্ড প্রসেসর থেকে কোন ডকুমেন্ট প্রিন্ট এবং আরেকটি উইন্ডোতে কোন একটি ফাইল ডাউনলোড আবার তৃতীয় কোন উইন্ডোতে একটি স্প্রেডশীট পুনর্বার হিসাব করে দেয়।
- মেমোরী ম্যানেজার – এটি কম্পিউটারের RAMকে নিয়ন্ত্রন করে এবং হার্ড ডিস্ক এর একটি ফাইলের মাধ্যমে সাধারনত RAM এর চেয়ে বড় ভার্চুয়াল মেমোরী সৃষ্টি করে।
- ডিস্ক ম্যানেজার – এটি ডিস্কের(হার্ড ডিস্ক) ভিতরে ডিরেক্টরী এবং ফাইল তৈরী এবং ব্যবস্থাপনা করে থাকে। যখন আপনি কোন একটি ফাইল চাবেন, ডিস্ক ম্যানেজার ডিস্ক থেকে ফাইলটি বের করে দিবে।
- নেটওয়ার্ক ম্যানেজার – এটা কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্ক এর মধ্যে চলমান সকল তথ্য বা ডাটা নিয়ন্ত্রন করে।
- অন্যান্য আই/ও (ইনপুট/আউটপুট) সার্ভিস ম্যানেজার – অপারেটিং সিষ্টেম কিবোর্ড, মাউস, ভিডিও ডিসপ্লে, প্রিন্টার ইত্যাদি ব্যবস্থাপনা করে।
- সিকিউরিটি ম্যানেজার – অপারেটিং সিষ্টেম কম্পিউটারের ভিতরে ফাইলগুলোর তথ্যের গোগনীয়তা রক্ষা করে এবং কে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারবে তা ঠিক করে।
অপারেটিং সিষ্টেম বলে লিনাক্সও এরকমই একটি জিনিস। লিনাক্সের এত জনপ্রিয়তা সম্পর্কে জানতে চাইলে এর ইতিহাসের খানিকটা জানার দরকার আছে। ইউনিক্স এর ১ম ভার্সন তৈরী হয় কয়েক যুগ আগে। তখন এটা প্রাথমিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষনার জন্য ব্যবহার করা হত। ১৯৮০ সালের দিকে চলে আসে সান(Sun)এর মত কম্পানীর অতি-শক্তিশালী ইউনিক্স নির্ভর ডেস্কটপ ওয়ার্কষ্টেশন। এরপর এই ওয়ার্কষ্টেশনের জগতে সান এর প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভাব ঘটে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান: এইস.পি.(HP), আই.বি.এম (IBM), সিলিকন গ্রাফিক্স, এ্যাপোলো এবং আরও অনেকে। দূর্ভাগ্যবশত এদের প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা ইউনিক্স এর সংস্করণ ছিল। এবং এটা সফ্টওয়ারের এর বাজার কঠিন করে তুলছিল। উইন্ডোজ এন.টি. এই বাজারের জন্য খুব ভাল এক পণ্য ছিল। ইউনিক্স অপারেটিং সিষ্টেমের সকল দিকগুলোই ছিল এই এন.টি.র মধ্যে – সিকিউরিটি, একাধিক সি.পি.ইউ. এর সাপোর্ট, প্রচুর মেমোরী এবং ডিস্ক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি – কিন্তু এই ফিচারগুলো এতে এমনভাবে থাকত যেন প্রায় সকল উইন্ডোজ এ্যাপ্লিকেশনের সাথে এরা কম্পাটিবল হত।
হাই-এন্ড ওয়ার্কষ্টেশন এর জগতে মাইক্রোসফ্ট এর আগমন এক বিশাল গতির সঞ্চার করল। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অপারেটিং সিষ্টেমের মালিক হওয়ায় এবং ইউনিক্স ওয়ার্ল্ড এর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রন পর্যাপ্ত না থাকায় ইউনিক্স দূর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু মাইক্রোসফ্ট নিয়ে বহু মানুষের ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল। এই ধরনের একটি অবস্থায় লিনাক্স প্রবেশ করে এবং ব্যাপক আকর্ষন লাভ করে।
লিনাস টরভাল্ডস এর তৈরী লিনাক্স কার্নেল সবার জন্য বিনা পয়সায় উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। তারপর কার্নেলে যোগ দেয়ার জন্য টরভাল্ডস সবাইকে আমন্ত্রন জানান এবং তারা সবাই নিজ নিজ অবদান করেন বিনা পয়সায়। হাজার-হাজার প্রোগ্রামার লিনাক্সকে সমৃদ্ধ করতে থাকেন এবং লিনাক্স খুব দ্রুত তৈরী হয়ে যায়। যেহেতু এটি ফ্রি এবং একটি পি.সি. প্লাটফর্মের উপর চলে, হার্ড কোর ডেভেলপারদের মধ্যে একটি অংশ খুব তাড়াতাড়ি এর ভক্ত হয়ে যান।
বেশ কিছু বিভিন্ন ধরনের মানুষের কাছে লিনাক্স এর জন্য একটি বিশেষ আকর্ষন এবং প্রাপ্তি আছে:
- যারা আগে থেকেই ইউনিক্স জানেন এবং পি.সি. ধরনের হার্ডওয়্যারে এটা চালাতে চান
- যারা অপারেটিং সিষ্টেম প্রিন্সিপাল নিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা করতে চান
- যারা অপারেটিং সিষ্টেম এর উপর ভালো দখল অর্জন করতে চান বা যাদের এটা দরকার আছে
- যাদের মাইক্রোসফট এর সাথে ব্যক্তিগত সমস্যা আছে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন